পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার নিরাপত্তায় এপিবিএন

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় নিরাপত্তা জোরদারে রাঙ্গামাটিতে স্থাপন করা হচ্ছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) হেডকোয়ার্টার। শান্তিচুক্তি অনুযায়ী সেনাবাহিনী যেসব ক্যাম্প ছেড়ে এসেছে, সেসব জায়গায় মোতায়েন করা হচ্ছে এপিবিএন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বৃহস্পতিবার সকালে রাঙ্গামাটিতে এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান।

রাঙ্গামাটি পুলিশ লাইনসে বৃহস্পতিবার সকালে এপিবিএনের বিভিন্ন কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয় । অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

তিনি বলেন, ‘আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস দমন করে জনগণকে একটা নিরাপদ বাংলাদেশ উপহার দিতে পেরেছি; সেখানে এ তিন জেলায় কেন রক্তপাত হবে? আমরা চাঁদাবাজি করতে দেব না, রক্তপাত হতে দেব না। এপিবিএন এখানে নিরাপত্তা জোরদার করবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এপিবিএনের ডিআইজির কার্যালয়, ১৮ এপিবিএন রাঙ্গামাটি, ১৯ এপিবিএন বান্দরবান, এবং ২০ এপিবিএন খাগড়াছড়ির সদরদপ্তর, ১৮ এপিবিএনের আঠার মাইল ক্যাম্প, ১৯ এপিবিএনের রাবারবাগান ক্যাম্প এবং ২০ এপিবিএনের পুরাতন পঙ্খিমোড়া ক্যাম্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং তিন পার্বত্য জেলায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং উন্নয়নের জন্য সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন বলেন, ‘শান্তিচুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর যে ২৩৮ ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়েছে, সেসব ক্যাম্পে এপিবিএন মোতায়েন করা হচ্ছে। পার্বত্য এলাকার মানুষের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এপিবিএন কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’

অনুষ্ঠানে ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসন এবং অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তু নির্দিষ্টকরণ ও পুনর্বাসন সম্পর্কিত টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার, সংরক্ষিত নারী আসন-৯-এর সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. সাইফুল আবেদীন, র‌্যাবের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত আইজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, বোমাং সার্কেলের সার্কেল চিফ উ চ প্রু চৌধুরী, মং সার্কেলের সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী এবং চাকমা সার্কেলের সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, এপিবিএনের অ্যাডিশনাল আইজি ড. হাসান উল হায়দার ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, কারবারি, হেডম্যানসহ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

১৯৯৭ সালে করা ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির আলোকে তিন পার্বত্য জেলা থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৩৮টি ক্যাম্প প্রত্যাহার করা হয়। পার্বত্য অঞ্চল দুর্গম পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে সেখানে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পাশাপাশি মাদকের রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পুলিশের পক্ষে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে এ অবস্থাতেই সরকার তিন পার্বত্য জেলায় এপিবিএন মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১