দিনে সাশ্রয় হচ্ছে দেড় হাজার মেগাওয়াট

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্য নিয়ে শিডিউল লোডশেডিং চালু করে সরকার। একইসঙ্গে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে রাত আটটার পর দোকান পাট বন্ধা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। গত ১৯ জুলাই থেকে প্রতিদিন এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের ঘোষণা দেয় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। তবে এখন পর্যন্ত সারাদেশে দিনে সাশ্রয় হচ্ছে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এ তথ্য জানান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহম্মদ হোসেইন।

মোহম্মদ হোসেইন বলেন, বিশ্ব জ্বালানি পরিস্থিতি বিবেচনা করা আমরা সাশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নিই। এখন লোডশেডিং করে প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা হচ্ছে। রাত ৮টার পর দোকানপাট বন্ধ করায় আরও ৫০০ মেগাওয়াট সাশ্রয় হচ্ছে। শিল্প-কারখানাগুলোতে সাপ্তাহিক ছুটির যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা কার্যকর হলে আরও ৫০০ মেগাওয়াট সাশ্রয় হবে বলে আশা করছি।  তিনি আরও বলেন, এ মাসটাই কষ্ট করতে হবে। আগামী মাস থেকে লোডশেডিং কমে আসবে।

এদিকে, ঢাকায় রাত আটটার পর দোকান বন্ধ হলেও সারাদেশ বিশেষ করে জেলা বা উপজেলা শহরের চিত্র ভিন্ন। সেখানকার দোকানপাট বন্ধ করতে চাপ দেওয়ার মতো প্রশাসনিক লোকবল নেই বলে জানা গেছে কয়েকটি সূত্রে।

বিদ্যুৎ বিভাগ ও পিডিবি সূত্র বলছে, প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল শিডিউল লোডশেডিং হলে দুই হাজার মেগাওয়াট সাশ্রয় হবে। এরপর রাত ৮টার পর দোকান বন্ধ করার ওপর জোর দেওয়া হয়। এতে সাশ্রয়ের লক্ষ্য বাস্তবায়ন হয়নি। যে কারণে বিদ্যুৎ বিভাগের লোডশেডিং শিডিউল ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র বলছে, বিশ্ববাজারে তেল ও এলএনজির দাম বাড়ার কারণে জ্বালানি সাশ্রয়ের উদ্যোগ নেয় সরকার। এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে আরও আড়াই মাসের মতো সময় লাগবে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, অক্টোবর থেকে তাপমাত্রা কমে এলে একসঙ্গে আড়াই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াটের কুলিং লোড কমবে (বৈদ্যুতিক পাখা ও এসি)। তখন লোডশেডিংও তুলে দেওয়া সম্ভব হবে। এরমধ্যে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে এলেও আগের পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়া সম্ভব হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ইজাজ হোসেন বলেন, বিশ্ববাজারে যেমন সংকট আছে, আমাদের সংকটও একই জায়গায়। ডলারের দাম বেশি হওয়ায় জ্বালানির দামও বেশি। গ্যাস দিয়ে আমরা যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারি, তেল দিয়ে সে পরিমাণ সম্ভব হয় না। এজন্য সাশ্রয়ের বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতেই হবে। সরকার যদি শুধু ঘোষণা দিয়ে বসে থাকে, তাতেও কাজ হবে না। নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তা না হলে সাধারণের ভোগান্তি কমবে না।

সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি দুদিন করা হতে পারে। দেশের কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সাপ্তাহিক ছুটির বাইরে কর্মীদের হোম অফিস দিয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও ২৫ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যেখানে সুযোগ রয়েছে সেখানেই বিদ্যুতের ব্যবহার কমাতে হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ