বগুড়া নিউজ ২৪ঃ ক্রমহ্রাসমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাঁচাতে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহকারী যান, এক্সেভেটর ও বুলডোজারের মতো ভারী যান এবং কৃষি যন্ত্রপাতি বাদে সব যানবহন আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভুটান। দেশটির সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। খবর রয়টার্সের। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, রিজার্ভ হ্রাস রোধে ইউটিলিটি যান বাদে বাকি সব ধরনের যানবাহন আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভুটান, তবে দেশটি ভারী মাটি সরানোর যন্ত্র কিংবা কৃষি যন্ত্রপাতি আনার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে চীন ও ভারতের মাঝে পড়া ৮ লাখেরও কম মানুষের দেশটিতে তেল ও খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কড়াকড়ির কারণে গত দুই বছর বিদেশি পর্যটকের খরা দেখেছে ভুটান। গত মাসে প্রকাশিত রয়্যাল মনিটারি অথরিটির ডেটা অনুযায়ী, ২০২১ সালের এপ্রিলে ভুটানে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ছিল ১৪৬ কোটি ডলার। ওই বছরের ডিসেম্বরে সেটি কমে দাঁড়ায় ৯৭ কোটি ডলারে। ভুটানের অর্থ মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়, ১৫ লাখ গুলট্রামের কম মূল্যের ইউটিলিটি যান আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি যেসব গাড়ি পর্যটনে ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকেও নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ‘সাময়িক এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন নিশ্চিত করতে।’ প্রশ্ন উঠে আসছে, তা হলে কি শ্রীলঙ্কার মতোই অবস্থা হতে চলেছে ভুটানেরও? কমতে কমতে শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ বিদেশি মুদ্রাশূন্য হয়ে পড়েছে। ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছে উত্তাল হয়েছে সে দেশের জনতা, রাজ্য-রাজনীতি। আকাশছোঁয়া জিনিসপত্রের দামও। জনতার রোষের মুখে পড়ে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়াকে। দুর্বল অর্থনীতিকে চাঙ্গা না করলে ভুটানের অবস্থাও সুদূর ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কার মতোই হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। তবে অর্থনীতির হাল ফেরাতে ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে ভুটান সরকার। ভুটানের স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুন মাস থেকে ভুটান ৮ হাজারেরও বেশি বিদেশি গাড়ি আমদানি করেছে। এটিও বিদেশি মুদ্রা কমে আসার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম বলেও মনে করা হচ্ছে।