বরিশালে পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী চাষিরা

বরিশাল প্রতিনিধিঃ বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায় পতিত জমিতে শখের বসে পৃথকভাবে রেডলিপ, শাহি, কাশ্মিরি, টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ করে সংসারে সচ্ছলতা এনেছেন মির্জা ফনু মৃর্ধা, ইব্রাহিম, শহিদুল ও সুমন। সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে হয়ে উঠেছেন স্বাবলম্বী।

সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের ইছাগুড়া, পূর্ব ইছাগুড়া গ্রামের চাষি মির্জা আনোয়ার হোসেন ফনু ও ইব্রাহিম আকন ও মকরুম প্রতাপ গ্রামে আবুল মহরী পেঁপে চাষে সফল হয়েছেন।

এ ছাড়া সদর উপজেলার সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের কামার পাড়া গ্রামের মো. আরিফুর রহমান, চরকাউয়া ইউনিয়নের নয়ানী গ্রামের বাচ্চু সিকদার, চাদঁপুরা ইউনিয়নের হিজলতলা গ্রামের মো. জাহাঙ্গির হাওলাদার ও জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের বায়লাখালী গ্রামের প্রবাসী আবু বকর সিদ্দিকী সুমন ব্যপক সফলতা পেয়েছেন।

প্রান্তিক এসব চাষি জানান, বিগত বছরের তুলনায় এ বছর ব্যপক পেঁপের ফলন পেয়েছেন। পেঁপে বিক্রি করে গত বছর তুলনা তারা মুনাফাও করেছেন কয়েকগুন। প্রত্যেকেই পৃথকভাবে প্রায় প্রতি মাসে পেঁপে বিক্রি করে লাভ পাচ্ছেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মতো। ফল ও সবজি হিসেবে পেঁপে বেশ জনপ্রিয়। শুধু পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য একসময় বাড়ির আঙিনায় চাষ করা হতো ফলটি। বর্তমানে তারা বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষে চমক সৃষ্টি করেছেন। প্রতি মণ সময় ভেদে ৬০০ থেকে প্রায় ১৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন এ পেপেঁ ।

এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের বায়লাখালী গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকী সুমন জানান, এ বছর আরও ৫০০ মণ পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন তিনি। তার বাগানে শাহি, কাশ্মিরি, টপ লেডি জাতের ৯ শতাধিক পূর্ণবয়স্ক পেঁপে গাছ রয়েছে। প্রতিটা পেঁপে গাছে প্রায় ৫-৭ মণ পেঁপে ধরে। বর্তমানে এক একর জমিতে দুটি ঘেরের পাড়ে সারি সারি পেঁপে গাছ শোভা পাচ্ছে। প্রতিটি গাছের গোরা থেকে মাথা পর্যন্ত ঝুলে আছে অসংখ্য পেঁপে। তিনি সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ কেজি ওজনের পেঁপে সংগ্রহ করছেন।

সুমন আরো জানান, বর্তমানে তিনি এলাকার (মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় ফ্রি পেঁপে চারা লাগিয়ে বৃক্ষরোপণে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন। নিজের ফলানো পেঁপে বিনামূল্যে সবজি হিসেবে এলাকার একটি এতিমখানায় দিয়ে থাকেন তিনি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ ফাহিমা হক বলেন, উপজেলার প্রায় পেঁপে বাগানে দেখভাল করার জন্য গিয়েছি। এসব প্রান্তিক চাষিরা খুব কর্মঠ মানুষ। এরা প্রায় প্রত্যেকেই উপজেলায় পেঁপে চাষ করে চমক দেখিয়েছেন।

এ ব্যপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের (খামার বাড়ি) উপপরিচালক মো. হারুন-অর-রশীদ জানান, প্রান্তিক কৃষকেরা ধানসহ একাধিক চাষে ভালো মুনাফা না পাওয়ায় পতিত ও পড়ে থাকা খালি জমিগুলোতে পেঁপে চাষ করেছেন। বর্তমানে সেই জমিতে রেডলিপ, শাহি, কাশ্মিরি, টপলেডি জাতের পেঁপে চাষে অনেক সফল হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের কর্মকর্তাদের পরামর্শে চাষিরা ফলন ভালো পেয়েছেন। এসব কৃষকেরা আর্থিকভাবে অনেকটা লাভবান। বর্তমানে জেলার অনেকেই পেঁপে চাষে উৎসাহী হয়ে উঠেছেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ