খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নেই : রাষ্ট্রপতি

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। তিনি ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’ উপলক্ষ্যে আজ এক বাণীতে এ কথা বলেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও আগামীকাল রোববার (১৬অক্টোবর) ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২২’ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।’ এ বছর নির্ধারিত ‘বিশ্ব খাদ্য দিবসের’ প্রতিপাদ্য ‘কাউকে পশ্চাতে রেখে নয়, ভালো উৎপাদনে উত্তম পুষ্টি, সুরক্ষিত পরিবেশ এবং উন্নত জীবন’- যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে যথার্থ হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন।

আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে দারিদ্র্যহ্রাস ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় কৃষিই অন্যতম প্রধান নিয়ামক। কৃষি জনগণের খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহ, কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের কাঁচামাল সরবরাহের নিশ্চয়তা প্রদান করে।  তিনি বলেন, কৃষির গুরুত্ব অনুধাবন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্যস্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে কৃষি বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কৃষির উন্নয়নে কৃষকদের মাঝে খাস জমি বিতরণ, ভর্তুকি মূল্যে সার, কীটনাশক, উন্নত বীজ, সেচ ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের যুগোপযোগী নীতি ও পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশ দানাদার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ফসলের পাশাপাশি প্রাণিজ আমিষ খাতেও ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি  বলেন, প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রভাবের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি, সংস্কৃতি এবং জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমানভাবে আন্তঃসংযুক্ত হয়ে উঠছে। প্রায় ৭৫ শতাংশ দরিদ্র ও খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষ তাদের জীবনযাত্রার জন্য কৃষি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নির্ভর করে। বর্তমানে মহামারি, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, প্র্াকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতির উর্ধ্বমুখিতা দেখা দেওয়ার প্রেক্ষাপটে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খাদ্যপণ্য উচ্চমূল্যে বিশ্ববাজারে রপ্তানির মাধ্যমে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।

রাষ্ট্রপতি ‘আমাদের খাদ্যাভ্যাসে’ পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পরিমিত পরিমাণে নিরাপদ ও পুষ্টিসমৃদ্ধ মৌসুমি ফলমূল, শাকসবজি, প্রাণিজ আমিষ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তাকে টেকসই করতে ফসলের পুষ্টি সমৃদ্ধ নতুন নতুন জাত ও লাগসই প্রযুক্তির উদ্ভাবন এবং তা সম্প্রসারণে কৃষিবিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সকলে নিরলস প্রয়াস অব্যাহত রাখবেন।’ রাষ্ট্রপতি ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
খবর বাসস

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ