মৌলভীবাজারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮.৫ ডিগ্রি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ গেল কয়েকদিন থেকে হাওর, পাহাড় ও চা বাগান বেষ্টিত মৌলভীবাজার জেলায় বইছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ার কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় মৌলভীবাজারে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। দিনে ও রাতে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন শীতার্ত মানুষ। বিকেল হলে শীতের তীব্রতা বেড়ে তা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকছে। শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি ছিন্নমূল ও দিনমজুররা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রচণ্ড কুয়াশায় দূরপাল্লার গাড়ি চলাচলেও টাইম সিডিউলের বিঘ্ন ঘটছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক থেকে গাড়ি চলাচল করছে। শীতে কাবু চা বাগান ও হাওর তীরের মানুষসহ নিন্মআয়ের লোকজন।

গেল ক’দিন থেকে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে জেলার চা শ্রমিক ও হাওরের বোরো চাষিরা মাঠে কাজ করছেন। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা চলমান থাকায় ভর মৌসুমে বোরো চাষের শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা জুড়ে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুগুলোও প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে। ঠাণ্ডা বেড়ে চলায় বিপাকে পড়েছেন নিন্মআয়ের মানুষজন। শীতের প্রভাবে কাজ কর্ম অনেকটা কমে যাওয়ায় আয় রোজগার নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন হাওর তীরের বোরো চাষীরা। প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও তাদেরকে ধানের চারা রোপন ও পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। জেলা জুড়ে দেখা দিচ্ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই। জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়া রোগির সংখ্যা বাড়ছেই। ঠান্ডাজনিত রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। প্রতিটি হাটবাজারে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার তাপমাত্রা ছিল ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলার উপর দিয়ে এখন মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বইছে। আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা এ ধরনের থাকতে পারে। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: আহমেদ ফয়ছল জামান জানান, শিশু ওয়ার্ডে সিট রয়েছে ৫১টি। শীত আসার পর থেকে প্রতিদিন ভর্তি থাকছে ৮০ থেকে ৯০ জন শিশু। তবে অন্যদিনের তুলনায় মঙ্গলবার শিশু রোগী ভর্তি কিছুটা কমেছে। তবে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শীতজনিত রোগে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ও বয়স্কদের নিয়মিত ভর্তি অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৬৮ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ