বগুড়ায় গ্যারেজ গুলোতে জুয়া ও মাদকের জমজমাট আসর

রজিবুল ইসলামঃ  বগুড়া শহর ও শহরতলীর বেশ কিছু মোটরসাইকেল, রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশা গ্যারেজে রাত বারার সাথে সাথে জমে উঠে জুয়া খেলা এর পাশাপাশি মাদকদ্রব্য বিক্রি ও সেবন। বাইরের মানুষের আনাগোনা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে থেকে নিরাপদ থাকতে জুয়াড়ি ও মাদক ব্যবসায়ীরা বেছে নিচ্ছে এসব গ্যারেজ। গ্যারেজ গুলোতে মাদকের মধ্যে সর্বোচ্চ সেবন করা হয় ইয়াবা ও গাঁজা। গ্যারেজ সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয়রাও বিষয়টি বুঝে উঠতে পারে না গ্যারেজ গুলোতে কি চলছে। তবে যারা রিকশা ও মোটরসাইকেল গ্যারেজে রাখে তাদের অনেকেই বিষয়টি টের পেল এই নিয়ে এত মাথা ঘামায় না। বগুড়া শহরের বেশ কয়েকটা এলাকা ঘুরে জানা গেছে, শহরের ভিতর আন্ডারগ্রাউন্ড সহ বেশ কিছু গ্যারেজ রয়েছে। যে গ্যারেজ গুলোতে জুয়া ও মাদকের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, একটু রাত বাড়লেই গ্যারেজগুলোর দরজা বন্ধ রাখায় ভিতরে কারও প্রবেশ করার সুযোগ থাকে না সেই কারণে ভিতরে কি হচ্ছে তা বোঝা মুশকিল। তবে গ্যারেজের ভিতরে অবস্থানরত মানুষের চিৎকার চেঁচামেচিতে ও গ্যারেজের ভিতর থেকে বের হওয়া ধোয়ার গন্ধে বোঝা যায় যে ভিতরে মাদক সেবন চলছে। দিনের চেয়ে রাতে আসর বেশি জমে গ্যারেজ গুলোতে।

শহরের নাটাইপাড়া, নারুলী, চেলোপাড়া, মালতিনগর, খান্দার, জহুরুলনগর নামাজগড়, উপশহর, কাটনারপাড়া, বৃন্দাবনপাড়া, আটপাড়া, ফুলবাড়িসহ বেশ কিছু এলাকায় এই গ্যারেজ গুলোর রয়েছে। আধা পাকা ও টিনের ছাউনি দিয়ে গড়ে ওঠা এইসব গ্যারেজে চলছে জুয়া ও মাদক সেবন ও বিক্রি। রিকশা চালকদের পাশাপাশি বাইরের এলাকার স্কুল কলেজ পড়ুয়া উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েরা ছাড়াও গ্যারেজ মালিকের সাথে বহিরাগত মাদকসেবী ও জুয়াড়িরাও আসেন এমনটাই বলছেন ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা।

সূত্র জানায়, স্থানীয় নেতাকর্মী, ভুঁইফোড় সাংবাদিক ও ওই এলাকার ফাঁড়ি পুলিশের কিছু অসাধু পুলিশ সদস্যদের ম্যানেজ করে এসব গ্যারেজ গুলোতে চলছে মাদক কারবার ও জুয়া খেলার আসর। এই জুয়ার আসর গুলো রিকশা গ্যারেজ মালিক এলাকায় তাদের প্রভাব খাটিয়ে মাদক ব্যবসা ও জুয়া পরিচালনা করছে। এদের মধ্যে বেশিভাগই জড়িত আছেন ঠিকাদারী ব্যবসায়ী, পোল্ট্রি খামার ব্যবসায়ী, পরিবহন ব্যবসায়ী ও পরিবহন চালক তারা সকলেই দিনের আলোতে টাকা উপার্জনের জন্য মরিয়া হয়ে ছোটে। কিন্তু রাত হলেই পাল্টে যায় তাদের চিত্র তারা সবাই একত্র হয়ে বসায় জুয়ার আসর। টাকার ছড়াছড়ি পাশাপাশি চলে মাদক সেবন ও মাদক বিক্রি।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম তুহিন জানান, জুয়া ও মাদক আমাদের সমাজের জন্য সবচাইতে বড় একটা অবক্ষয়। এটা বন্ধের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। জুয়াড়ি ও মাদক ব্যবসায়ীদের গোড়া থেকে উচ্ছেদ না করা গেলে পরবর্তী প্রজন্মের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদেরকে এগোতে হবে। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের সচেতন মহল কে এর বিরুদ্ধে এগিয়ে আসতে হবে।

এই বিষয় নিয়ে বগুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ক্রাইম এ- অপস) আবদুর রশিদ জানান, জুয়া ও মাদক ব্যবসা বন্ধে জেলা পুলিশ নিরালস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাধিক টিম এটা নিয়ে কাজ করছে এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে অপরাধীদের আটক করতে সক্ষম হচ্ছে। অপরাধী সে যত বড়ই হোক কোন ছাড় নেই পুলিশের কাছে। জুয়া ও মাদক নির্মূলের অবশ্যই সবাইকে এগিয়ে এসে পুলিশকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮