শনিবার ময়মনসিংহে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে উৎসবের আমেজ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ শনিবার ময়মনসিংহে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাঁচ বছর পর শনিবার (১১ মার্চ) ময়মনসিংহের মাটিতে পা রাখবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এ আগমনকে ঘিরে ময়মনসিংহ সেজেছে নবরূপে। নগরের প্রতিটি সড়ক ও মহাসড়কজুড়ে এখন তোরণের ছড়াছড়ি। রঙিন ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে সেজেছে পুরো নগরী। প্রধান প্রধান সড়ক ছাপিয়ে অলিগলিতেও শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার-ব্যানার-প্যানাফ্ল্যাক্স। চেনা সড়কগুলোও পেয়েছে ঝকঝকে তকতকে রূপ। বর্ণিল আলোকসজ্জা ও রঙ-তুলির আঁচড়ে নগরী যেন পেয়েছে নববধূর সাজ।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই জনসভাকে ঘিরে দলীয় প্রধানের দৃষ্টি কাড়তে তোরণ, ব্যানার আর প্যানাফ্ল্যাক্স নির্মাণ করেছেন দলটির নেতা-কর্মী ও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। মসিক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর উদ্যোগে নগরজুড়ে পাঁচ শতাধিক বিলবোর্ড, ব্যানার-ফ্যাস্টুন, তোরণ শোভা পাচ্ছে।

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে মেয়রের অনুসারীরা পাঁচ হাজারের বেশি ব্যানার-ফ্যাস্টুন টাঙিয়েছেন। তাদের বাইরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও প্যানাফ্ল্যাক্স, ব্যানার-ফেস্টুন ও তোরণে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

শনিবার ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রায় ১৫ লাখ লোক সমাগমের টার্গেট নিয়েছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। বসে নেই দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও। দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন দলটির শীর্ষ নেতাকে বরণ করে নিতে। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ইতিমধ্যে পৃথক বর্ধিত সভা করেছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। আওয়ামী লীগের উদ্যোগে নগরের প্রতিটি সড়কে দিন রাত চলছে মাইকিং।

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটু বলেন, দেশের সার্বিক খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়নে দেশবাসীর কাছে আস্থা অর্জন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ময়মনসিংহকে বিভাগসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন। আর এ কৃতজ্ঞতা থেকেই দলীয় সভানেত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা সর্বোচ্চটুকু করছি। সাংগঠনিক হৃদয়ের বাধভাঙা উচ্ছ্বাসে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে বরণ করে নিতে প্রস্তুত ময়মনসিংহ। আশা করছি জনসভায় ১০ থেকে ১৫ লাখ লোকের সমাগম ঘটবে।

তিনি আরও বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনে এই অঞ্চলের সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা হবে। যা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে দিকনির্দেশনাগুলো দিবেন তা আমরা সর্বস্তরের মানুষের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে আমরা পৌঁছে দিতে সক্ষম হবো। যা আমাদের দলকে সুসংগঠিত করা এবং আগামী নির্বাচনে বিজয়ী করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম জানান, সমাবেশের মঞ্চ তৈরি হচ্ছে নৌকার আদলে। মঞ্চের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সমাবেশের জন্য সকাল থেকে রাত অব্দি প্রচার-প্রচারণা চলছে। স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভায় রূপ নিতে কার্যক্রম পুরোদমে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা কাজ করছি। এছাড়াও নেত্রীর আগমনের খবরে উচ্ছ্বসিত গোটা ময়মনসিংহ।

জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী কী কী উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করবেন তার তালিকা করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নিছিদ্র নিরাপত্তায় প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। জেলা পুলিশের পাশাপাশি বাইরের জেলা থেকেও এখানে পুলিশ আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ মঞ্চের প্রথম সারিতে নিরাপত্তায় থাকবে এপিবিএন। সাধারণ মানুষের যেন কোনো ভোগান্তি না হয় সেজন্য ট্রাফিকের দিক থেকেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা কোনো ছাড় দেব না। গ্যাস সিলিন্ডারের যেসব দোকান রয়েছে সেগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তার পাশাপাশি জনসমাবেশস্থলে আগত জনগণ যেন উৎসবমুখর পরিবেশ পায় সেক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ ময়দানে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ