ষ্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে ঝাড়ু দেয়ার দ্বন্দ্বে অভিভাবককে অপদস্থ হওয়ায় এবার প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খাতুনের অপসারণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। তাদের দাবি, প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বহীনতার কারণে অভিভাবক অপদস্থের ঘটনা হয়। এমনকি ঘটনার পরেও শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক।
সোমবার বিদ্যালয়ের সামনে এই দাবি জানায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিচারকের পা ধরে অভিভাবকের মাফ চাওয়ার ঘটনার আরেক কুশিলব স্বয়ং প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন। তার দায়িত্বহীনতা ও বিচারককে বেশি গুরুত্ব দেয়ার ফলে সেদিন ওই অপদস্থের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি এই বিক্ষোভ করার জন্য প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। তাদের বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার ভয়ও দেখান এই প্রধান শিক্ষক।
বিদ্যালয়ে নিজেদের শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে শঙ্কিত এই শিক্ষার্থীরা এ জন্য প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুনের অপসারণের দাবিতে সোমবার মানববন্ধনের উদ্যোগ নেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেলা ১১টার দিকে তারা জড়ো হয় বিদ্যালয়ের সামনে। বিষয়টি টের পেয়ে প্রধান শিক্ষক তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এতেও না হলে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামকে জানান প্রধান শিক্ষক। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নিলুফা ইয়াসমিন ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ের ভিতরে নিয়ে কথা বলেন। এর পরপরই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থেকে বের হয়ে অভিযোগ করে যে মানববন্ধন করার উদ্যোগ নেয়ায় তাদের বকাঝকা করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ের ভিতরে যাওয়ার পর আমাদের জেরা করা হয়। এ সময় বলা হয়, কেন আমরা সাংবাদিকদের ডেকে এনেছি।
এ সময় অভিভাবকদের অভিযোগ, একজন প্রধান শিক্ষক হয়ে উনি শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈষম্য করতে পারেন না। কিন্তু উনি তাই করে আসছেন। বিচারক চলে গেলেও প্রধান শিক্ষকের কোনো বিচার না হলে তিনি একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে থাকবেন। আবার বিক্ষোভ করার জন্য শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা থেকে শুরু করে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটাবেন। অভিভাবকরা আরও জানায়, এই প্রধান শিক্ষক প্রায় ১৬ বছর ধরে এক স্কুলে আছেন। তিনি এখানে একক আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার করে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়ে উপস্থিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নিলুফা ইয়াসমিনের কাছে শিক্ষার্থীদের দাবি ও তদন্তের বিষয় কথা বলতে চাওয়া হয়। কিন্তু তিনি গণমাধ্যমের কাছে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
পরে শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন। তিনি বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কোনো কথা বলিনি। আর আমি এখন তদন্তের অধীন। এ জন্য এসব বিষয়ে আর কোনো কথা বলব না। তদন্ত শেষ হলে বলব। কারণ আমিও পরিস্থিতির শিকার হয়েছি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের কে ভয় দেখিয়েছে তা ঠিক বলতে পারবো না। তবে গত বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা। তদন্তটি সম্পূর্ণ সুষ্ঠু হবে।