ঈদকে সামনে কর্মমুখর সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লীগুলো

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে তাঁতকুঞ্জখ্যাত সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লীগুলো এখন কর্মমুখর। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত তাঁত বুননের খটখট শব্দে মুখোরিত জেলার প্রতিটি তাঁতপল্লী। ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছে এখানকার তাঁতী ও তাঁত মালিকরা। তাঁতপল্লীতে বেনারশি, সিল্ক, রেশমী, কটন, জামদানি ও কাতান শাড়িতে নিপুনহাতে আধুনিক ও শৈল্পিক কারুকার্যে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে বাহারি নকশাঁ। তবে তাঁত মালিকরা বলছে ক্রমাগত কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়া রং ও সুতার বাজার নিয়ন্ত্রণকরা গেলে আবারো ঘুরে দাঁড়াবে জেলার ঐতিয্যবাহী এই তাঁতশিল্প।

সিরাজগঞ্জের তাঁতে বুনন হরেক রকম শাড়ি লুঙ্গির চাহিদা দেড়জুড়ে। গুণে-মানে অপ্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে প্রতি বছর ঈদ বা যে কোন উৎসবকে সামনে রেখে সে চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এ কারনেণ তাঁত পল্লীতে কাজের চাপ বেড়েয়ায় দ্বিগুণ। রাতদিন দম ফেলার সময় থাকেনা শ্রমিকদের। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে মধ্য রাত পর্যন্ত তাঁত বুননের খট খট শব্দে মুখোরিত এখন জেলার বেলকুচি, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর ও সদর উপজেলা সহ প্রতিটি তাঁতপল্লী। এখানে তৈরি হচ্ছে বাহারি নাম আর নতুন নতুন ডিজাইনের আধুনিক মানের জামদানি, সুতি জামদানি, সুতি কাতান, বেনারসি ও বিভিন্ন ধরনের লুঙ্গি। উৎসবকে সামনে রেখে কাপড় তৈরি ও বিক্রি করে কিছুটা লাভবান হয় তাঁতী ও তাঁত মালিকরা। তবে ঘনঘন লোডশেডিং এর কারণে উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হলেও জেলার তাঁতপল্লীগুলো আবারো কর্মমুখর হয়ে ওঠায় খুশি তাঁত শ্রমিকরা। কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় ঈদের সামনে কিছুটা লাভের আশা করছে তাঁতী ও তাঁত মালিকেরা।

এখানকার তাঁতীদের উৎপাদিত কাপড় কেনা বেচাকে কেন্দ্র করে বেলকুচি ও শাহজাদপুরের কাপড় হাটগুলোও ক্রেতা বিক্রেতা আসতে শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকার এসে পাইকারি দরে কাপড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার তাঁত মালিকরা বলছেন, দুই বছর ধরে করোনার প্রভাবনা থাকায় আবারো তাঁতের কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। তবে দীর্ঘদিন লোকসানের মুখে থাকায় পুঁজি সংকটে পড়েছে অধিকাংশ তাঁত মালিক। ঈদ উপলক্ষে নতুন করে শুরু করলেও রং সুতাসহ সব উপকরণের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদিত পণ্যের কাংখিত দাম পাচ্ছেন না তারা।

বেলকুচি হ্যান্ডলুম ওনার্স এ্যাসোসিয়েশন সভাপতি এমএ বাকী জানান, তাঁত শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে অনিয়ন্ত্রিত রং ও সুতার বাজার ব্যবস্থা মনিটরিং করা দরকার। একই সাথে তাঁত মালিকদের তাঁতের কাঁচামাল আমদানির সুযোগ দিতে হবে। তা না হলে তাঁত মালিকরা লোকসান গুণতে গুণতে পথে বসে যাবে। ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখে যাবে না। ইতোমধ্যে পুঁজি হারিয়ে অনেক তাঁতী তাদের কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০