স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ সরকারের পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব নাজমুল আহসান বলেছেন, আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পেরেছি। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত হওয়ার পাশাপািশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে।
এ স্মার্ট বাংলাদেশ হবে উচ্চ আয়ের, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত মানব সম্পদের স্থিতিশীল অর্থনীতি ও নগরায়নের এক দেশ, যেখানে সকল সেবাই থাকবে নাগরিকের হাতের মুঠোয়। তাই এ উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সমন্বিত প্রচেষ্টা বগুড়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আজ মঙ্গলবার (২ মে) সকালে বগুড়া সার্কিট হাউজে আয়োজিত স্মার্ট ডিস্ট্রিক ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২৩ উপলক্ষে ‘স্মার্ট বগুড়া জেলা বিনির্মাণে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এক কথা বলেন।
বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো: সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী কর্মশালায় তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ ধারণাটি ৩টি নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এ গুলো হলো পেপারলেস, ক্যাশলেস ও প্রেজেন্সলেস। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ৪টি ভিত্তির কথা বলেছেন তা হলো স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ। তিনি বলেন,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দেশের ৬৪ জেলাকেই স্মার্ট জেলায় পরিণত করা হবে। এর মধ্যে বগুড়া অন্যতম। তবে করতোয়া নদীর উন্নয়ন ছাড়া বগুড়াকে স্মার্ট শহরে পরিণত করা সম্ভব নয়। তাই করতোয়া নদীকে সংস্কার করে প্রাণ ফিরে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ও সিভিল সার্জন মো: শফিউল আজম। এ ছাড়া জুমের মাধ্যমে কর্মশালার বিষয়ে মূল ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন উপ-সচিব ও এনপিএফ স্পেশালিস্ট, এটুআই মোহাম্মদ শাছুজ্জামান। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিক, বগুড়া সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াহিদা রহমান, উপাধ্যক্ষ ড: বেল্লাল হোসেন, দৈনিক করতোয়ার বার্তা সম্পাদক প্রদীপ ভট্রাচার্য্য শংকর প্রমুখ।
কর্মশালায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, সাড়ে ১৩ কিলোমিটার বগুড়া শহর ঁেঘষে থাকা করতোয়া নদীর অবৈধ দখল ও দূষণ ঠেকাতে হবে। করতোয়া নদীর প্রকৃত সীমানা নির্ধারণ করে দখলদারদের উচ্ছেদ করতে হবে। বক্তারা বলেন, নদীর সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারের মাধ্যমে এই নদী প্রাণ ফিরে পেলে বগুড়া স্মার্ট বগুড়ায় পরিণত হবে। সেইসাথে অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ শহরে যানজট কমবে। বাণিজ্যিক কারনে মানুষ নদী পথে যাতায়াত শুরু করবে। বক্তারা আরও বলেন,স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণা তরুণ ও নতুন প্রজন্মের মধ্যে প্রথিত করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা গেলে নতুন প্রজন্ম সুফল পাবে। যতই বিদ্যুতের চাহিদা নিশ্চিত করা যাবে, ততই বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে।
উল্লেখ্য, কর্মশালায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ, সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ ও এনজিও প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন। এদিকে আমাদের সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি জানান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান বলেছেন, যমুনা নদীর ভাঙন থেকে বগুড়াবাসীকে রক্ষার জন্য এ সরকার বিভিন্ন সময়ে সারিয়াকান্দি সোনাতলায় বিভিন্ন ধরনের স্পার নির্মাণ এবং নদী তীর সংরক্ষণের কাজ বাস্তবায়ন করেছে। যমুনা নদী শাসনের এ কাজগুলো বাস্তবায়ন করায় এ জনপদ যমুনা নদীর ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে।
স্থায়ীভাবে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেতে এ এলাকায় আরও কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হবে। আজ মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে বগুড়া সারিয়াকান্দির নিজবলাইল স্পার, হাসনাপাড়া স্পার, কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ, দীঘলকান্দি হার্ড পয়েন্ট, দেবডাঙ্গা ফিশপাস এবং নদী তীর সংরক্ষণের কাজ পরিদর্শন শেষে পৌর এলাকার কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধে স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক রঞ্জন আলী প্রামানিক (পশ্চিমাঞ্চল), চিফ ইঞ্জিনিয়ার জহিরুল হক (রাজশাহী জোন), বগুড়া জেলা তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী নজমুল হক, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবুজ কুমার বসাক, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মন্টু, মেয়র মতিউর রহমান মতি, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী তরফদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনূর বেগম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজেশ কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।