হেমন্তে ঘুরে আসুন খাগড়াছড়ি

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ সৌন্দর্যের অভয়ারণ্য খাগড়াছড়ি দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণের একটি। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সাংস্কৃতিক মিশ্রণে তৈরি এই খাগড়াছড়ি। ব্যবসা কিংবা ঘুরতে যাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ির ঝর্ণা ও প্রকৃতি বর্তমানে অনেকের ভ্রমণের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।

ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি যেতে সড়ক পথ একমাত্র ভরসা। একটু বুদ্ধি খাটিয়ে খরচ করলে, বেশ কম খরচে ঘুরে আসতে পারেন প্রকৃতির কাছ থেকে। এখানে ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি। অবশ্য আপনি চাইলে বছরের যেকোনো সময় যেতে পারবেন। তবে সরকারি কোন ছুটিকে কেন্দ্র করে গেলে আগে থেকেই টিকিট বুকিং দিতে হবে।

প্রকৃতি, পাহাড় আর ঝর্ণা সবই আছে এখানে। খাগড়াছড়ির কথা এলেই প্রথমে আসবে আলুটিলার কথা। এটা মূলত প্রাকৃতিকভাবে তৈরি গুহা। আলুটিলা তাই পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। স্থানীয়রা এটাকে আলুটিলা গুহা বলে। সেখানে প্রবেশ করতে হয় হাতে মশাল নিয়ে। অবশ্য এই মশাল আপনাকে আগে সংগ্রহ করে আনতে হবে না। প্রবেশ পথেই মশাল কিনতে পাওয়া যায়। পাহাড়ের এই গুহাতে একা ঢুকলে যেকোনো পর্যটকের শরীর শিউরে উঠবে। তাই গ্রুপে যাওয়া উত্তম।

আগেই বলেছি ঝর্ণা ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই খাগড়াছড়ি। শহর থেকে মাত্র বিশ কিলোমিটার দূরে রয়েছে আরও একটি আকর্ষণ। তা হলো মাতাই পুখিরি। এটা মূলত একটি হৃদ। মহালছড়ি উপজেলার নুনছড়িতে দেবতার আশীর্বাদ স্বরূপ পাহাড়ের চূড়ায় প্রাকৃতিক হ্রদ ‘মাতাই পুখিরি’। এছাড়াও রয়েছে হর্টিকালচার হ্যারিটেইজ পার্ক, মানিকছড়ির মং রাজবাড়ি, পানছড়ি, শান্তিপুর অরণ্য কুটির, হাতিমাথা পাহাড়, নিউজিল্যান্ড রোড পাড়া এবং মায়াবিনী লেক।

প্রকৃতির পাশাপাশি যারা ঝর্ণা পছন্দ করেন তাদের জন্য খাগড়াছড়িতে রয়েছে ‘তৈদুছাড়া ঝর্ণা’। শহর থেকে প্রায় বিশ কিলোমিটার দূরে দীঘিনালা উপজেলায় মিলবে এই ঝর্ণা। ঘন জঙ্গলের মাঝে আঁকাবাঁকা ঢেউ খেলা পথ দিয়ে পাহাড়ের ভাজে বয়ে চলছে প্রকৃতির সৌন্দর্যের মায়া কান্না। পথ অতিক্রম করার পাশাপাশি শুনতে পাবেন ঝর্ণার কলকল জলের শব্দ। মূল ঝর্ণায় পৌঁছানোর আগেই আপনার শরীরে শিহরণ ঘটাবে প্রকৃতির লীলাখেলা। এ যেনো সৃষ্টিকর্তার এক অপরামেয় আবিষ্কার। এর পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন ‘রিসাং ঝর্ণা’ যা খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাংয়া উপজেলার সাপমারা গ্রামে। স্থানীয়রা একে সাপ মারা রিছং ঝর্ণা বলে।

এখানে ভ্রমণের সময় সঙ্গে রাখতে পারেন পানির বোতল ও নিচে নামতে সাহায্য করে এরকম লাঠি। পথটা পিচ্ছল হবার কারণে প্রয়োজন হতে পারে। একজোড়া স্যান্ডেল অথবা জুতা আপনাকে পিচ্ছিল পথে হাঁটতে সাহায্য করবে।

কোথায় থাকবেন: খাগড়াছড়িতে থাকতে শহরে রয়েছে বিভিন্ন মানের হোটেল। ৬০০ থেকে ৩ হাজার ৭০০ টাকায় মিলবে এসব থাকার হোটেল। এখানে ভালোমানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে রয়েছে হোটেল গাইরিং, অরণ্য বিলাস, গিরি থেবরা ও হোটেল ইকো ছড়ি ইন।

যাতায়াতব্যবস্থা: খাগড়াছড়ির একস্থান থেকে অন্য জায়গা যেতে রয়েছে বাইক অথবা চান্দের গাড়ি। এছাড়া কাছাকাছি যাতায়াতের জন্য আছে অটোরিকশা। যদিও স্থানীয়দের কাছে এটি টমটম নামে পরিচিত। জনভেদে ও স্থানভেদে টমটম গাড়ির ভাড়া পরবে ১০ থেকে ৩০ টাকায়। চান্দের গাড়ির ভাড়া পরবে স্থান ভেদে জনপ্রতি ৮০-১৫০ টাকা। বাইক মিলবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আর সিএনজি পাবেন ভাড়া নিবে জনপ্রতি ৫০-১৫০ টাকা।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ