হত্যার বিচারসহ সাতদফা বাস্তবায়নের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ সাঁওতালদের

গাইবান্ধ প্রতিনিধি: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বহুল আলোচিত সাঁওতাল হত্যার বিচারসহ সাতদফা বাস্তবায়নের দাবীতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন সাঁওতালরা। শনিবার (২৩ মার্চ) বেলা ১২টা থেকে ঘন্টাব্যাপি গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহসড়কের কাটামোড় নামকস্থানে এ বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়।

সাঁওতালপল্লী মাদারপুর জয়পুরপাড়া, সাহেবগঞ্জ, মেরীসহ বিভিন্ন এলাকার পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষ কাটামোড় নামকস্থানে সমাবেত হন। এরপর তাদের একটি বিক্ষোভ মিছিল গোবিন্দগঞ্জ-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একইস্থানে সমাবেশ করেন। সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি পুনরুদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাস্কের সভাপতিত্বে সমাবেশ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, কমিটির উপদেষ্টা হাজি নুরুল ইসলাম, সহসভাপতি সুফল হেমব্রম, সহসভাপতি ইস্তিরেনা মুুরমু, সহসাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুফল হেমব্রম, কোষাধ্যক্ষ প্রিসিলা মুরমু, আদিবাসী নেতা বার্নাবাস টুডু, রাফায়েল হাসদা, সাঁওতাল হত্যা মামলার বাদী থমোস হেমব্রম ও আদিবাসী নেত্রী অলিভিয়া হেমব্রম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, হত্যার সাত বছর পেরিয়ে গেলেও একজন আসামীকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা উল্টো ইক্ষুখামারের জমিতে পাকা ঘর নির্মাণ করে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর তিন সাঁওতাল হত্যাসহ নির্যাতন চালিয়েছে সেই কুচক্রি মহল আবারো ইপিজেড নির্মাণের নামে সাঁওতালদের বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তিন ফসলি জমিতে কোন কলকারখানা স্থাপন করা যাবেনা। তবে তারা কিভাবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ উপেক্ষা করতে চান। আমরাও ইপিজেড চাই তবে হত্যার বিচার, বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভাংচুর, ক্ষতিপূরণ ও সাঁওতাল-বাঙালির নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ সাতদফা বাস্তবায়ন করতে হবে। অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানান বক্তারা।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর বিরোধপূর্ণ জমিতে চিনিকল কর্তৃপক্ষ পুলিশ নিয়ে সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ইক্ষুখামারে আখ কাটতে গেলে বাপ-দাদার দাবী করে বাধা দেন সাঁওতালরা। এসময় পুলিশের গুলিতে শ্যামল হেমব্রম, রমেশ টুডু ও মঙ্গল মার্ডি নামে তিন সাঁওতাল নিহত হন। আহত হন উভয়পক্ষের অন্তত ৩০জন। সেইসঙ্গে সাঁওতালদের বসতবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ