বগুড়া নিউজ ২৪: ঈদ, বৈসাবি আর বাংলা নববর্ষের উচ্ছ্বাস বইছে পাহাড় কন্যা খাগড়াছড়িতে। ইট পাথরের ব্যস্তময় শহরের কোলাহল ছেড়ে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পরিজন ও প্রিয়জনদের নিয়ে ঈদের টানা ছুটিতে ছুটে আসা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দয্যের লীলাভূমি খাগড়াছড়িতে। এবারো তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
শনিবার ঈদের তৃতীয় দিনেও পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠেছে পাহাড়ের প্রতিটি পর্যটন স্পর্ট। ঈদের ছুটিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা খাগড়াছড়ির বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমাগম বেড়েছে স্থানীয়দেরও।
বছরব্যাপী কর্মব্যস্ততা কাটিয়ে ঈদুল ফিতরের এবার পাহাড়ে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বর্ষবিদায় ও বরণ অনুষ্ঠানের উৎসব মিলেছে সময়ের একই মোহনায়। এতে আনন্দের নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে দ্বিগুণ।
নানা কল্পকাহিনী ভরা আলুটিলা রহস্যময় প্রাকুতিক সুড়ঙ্গ, দৃষ্টিনন্দন তারেং, অপরূপ নির্মাণ শৈলী ঝুলন্ত ব্রিজ, রিছাং ঝরনা সবখানেই পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। এ ছাড়া যোগাযোগ সুবিধার কারণে খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেক যাচ্ছে উল্লেখযোগ্য পর্যটক। এতে বাড়তি আয় হচ্ছে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।
গাজীপুর থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আবু রায়হান, সালমা খন্দকার শাম্মী ও আবদুল আজিজ বলেন, খাগড়াছড়িতে প্রথম আসা। এতো সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য আমাদের দেশে আছে তা কোনোদিন কল্পনা করতে পারিনি। সৌন্দর্য্য আমাদেরকে মুগ্ধ করেছে। আগামীতে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসবো। এছাড়াও আলুটিলা বৌদ্ধ বিহার, জেলা পরিষদ পার্ক ঘুরেছি।
ঈদ, বৈসাবি আর বাংলা নববর্ষের উচ্ছ্বাস বইছে পাহাড় কন্যা খাগড়াছড়িতে।
ঈদ, বৈসাবি আর বাংলা নববর্ষের উচ্ছ্বাস বইছে পাহাড় কন্যা খাগড়াছড়িতে।
পর্যটন কেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর ঈদুল ফিতরের ছুটি ও ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাইং ও চাকমাদের বিজু উৎসব একই সময়ে হচ্ছে। প্রতিবছর দুই অনুষ্ঠান ঘিরে খাগড়াছড়িতে ব্যাপক পর্যটকের উপস্থিতি ঘটে। এবার যেহেতু দুই উৎসবই একই সময়ে তাই আশা করা হচ্ছে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক আসবে এ জেলায়। পুরো রমজান মাস জুড়ে পর্যটন খাতে খরা থাকলেও এরইমধ্যে ঈদুল ফিতরের ছুটি পর্যটকদের উপস্থিতি বেড়েছে।
খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক চন্দ্র কিরণ ত্রিপুরা বলেন, ‘সকাল থেকে অন্তত পাঁচ হাজার পর্যটক ভ্রমণ করেছে। এখানে রহস্যময় সুড়ঙ্গ, নন্দন পার্ক, লাভ ব্রিজ, ঝুলন্ত ব্রিজ, কুঞ্জছায়াসহ একাধিক পর্যটন স্পট রয়েছে। তাই পর্যটকদের আর্কষণও বেশি।
খাগড়াছড়ির আবাসিক হোটেল গাইরিং এর ব্যবস্থাপক প্রান্ত ত্রিপুরা বলেন, এরইমধ্যে হোটেলের অধিকাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। আগামীকাল থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটকদের চাপ বেশি থাকবে।
খাগড়াছড়ির ট্যুরিস্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, খাগড়াছড়ির প্রধান পর্যটনকেন্দ্র আলুটিলা, রিছাং ঝরনা, মায়াবিনী লেকসহ সবখানে পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। পর্যটক বেশি থাকায় সাজেকে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত স্পেশাল টিম কাজ করবে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ কয়েক স্তরের বাড়তি নজরদারীর ব্যবস্থা রয়েছে। ঈদুল ফিতর, বৈসাবিসহ পাহাড়ের বর্ণিল উৎসব উপভোগে যারা আসবেন সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুতি রয়েছে।