কুমিল্লায় ড্রাগন ফল চাষে ভাগ্য বদল

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ একসময় শুধু ধান, পাট ও দেশি ফল চাষ করেই জীবনযাপন করতেন গ্রামের মানুষ, কিন্তু সময় পাল্টেছে এখন। হাঁটছে মানুষ ভিন্ন পথে। মানুষ এখন দেশি ফলের পাশাপাশি বিদেশি ফল উৎপাদনে পারদর্শী হয়ে উঠেছেন। তারা বাড়ির পাশেই গড়ে তুলছেন বিদেশি ফলের বাগান। সে ধারাবাহিকতায় ড্রাগন এখন পরিচিত ফল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে গ্রামবাংলায়।

কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম আগানগর। গ্রামের বাড়ির পাশে ড্রাগন বাগান। এলাকার প্রথম বাগান হওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের মানুষ দেখতে ভিড় জমান। বাগান থেকে কিনে নিয়ে যান তাজা ফল। কেউ কেউ মাঠের পাশেই ফল কেটে খেতে শুরু করেন। সুস্বাদু ও দৃষ্টিনন্দন ফল খেয়ে ক্রেতার মুখে তৃপ্তির ঢেকুর দেখা যায়।

উদ্যোক্তা রাকিবুল হাসান জানান, কুমিল্লা পল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে (বার্ড) কয়েক বছর আগে একটি উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ নেন। তারপর নিজের ছাদে টবে কয়েকটি ড্রাগনের চারা লাগান। দুই বছরে সেখানে ভালো ফল পান। এক পর্যায়ে পরিকল্পনা করেন ড্রাগন নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কিছু করা যায় কিনা। সেই থেকে শুরু। এক প্রতিবেশী থেকে ৬০ শতক জমি লিজ নেন। জমি লিজ, বাগানের সরঞ্জাম, চারা লাগানোতে প্রায়ই ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। চারা নাটোর থেকে সংগ্রহ করেছেন। এ ফলের চারার রোগ বালাই তেমন নেই। পরের বছর থেকে ভালোভাবে ফল আসা শুরু হয়েছে। দুই দফায় প্রায় তিন লাখ টাকার ফল বিক্রি করেছেন। এই বছরে তার পুঁজি উঠে যাবে বলে আশা করছেন। গ্রামের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে পুষ্টিকর ফল খাওয়াতে পারায় আনন্দ আছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সরেজমিন বাগান ঘুরে দেখা যায়, একেবারে লতার মতো সবুজের ঘেরে ড্রাগন ধরেছে। প্রায় পাঁচ ফুট উচ্চতার খুঁটিতে পেঁচিয়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের গাছ। রাকিবুল জানান, এ ফলে ফরমালিন ও ক্ষতিকারক কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না বলে এর চাহিদা বেশি।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, এলাকার কৃষকদের ড্রাগন চাষে উৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দেন। বাড়ির আঙিনা ও ফেলে রাখা জমিতে এ ফলের চাষ করে তারা লাভবান হচ্ছেন। এ ছাড়া এখানকার মাটি ফল চাষাবাদের জন্য বেশি উপযোগী।

তিনি আরও বলেন, ড্রাগন ফল দেশের চাহিদা মিটিয়ে অচিরেই বিদেশ রপ্তানি করা যাবে। আমরা সেই সুদিনের অপেক্ষায়।
সূত্র : বাসস

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ