পুলিশকে বিব্রত করে, এমন কিছু না করার নির্দেশ

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ পুলিশ বাহিনীকে বিব্রত করে- এমন কাজ না করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। পাশাপাশি থানা হাজতে আত্মহত্যার সহায়ক কোনো কিছু যাতে না থাকে তা নিশ্চিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কমিশনার।

আজ বুধবার সকালে ডিএমপি সদরদপ্তরে জুলাই মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ সদস্যদের এমন নির্দেশনা দেন তিনি।

সভা শেষে ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ কমিশনারের নির্দেশনা ও বক্তব্য তুলে ধরা হয়।

সভায় ভালো কাজ ও জনসম্পৃক্ততার মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন এবং পুলিশিং করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার কথা বলেছেন ডিএমপি কমিশনার।

গত ১৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানা হাজতে সুমন শেখ ওরফে রুমন (২৬) আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ বলছে, সুমন হাজতখানার লোহার গ্রিলের সঙ্গে গলায় পরনের প্যান্ট প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে আত্মহননের দৃশ্য স্পষ্ট। স্বজনদের অভিযোগ, পুলিশের দায়িত্বে অবহেলার কারণে সুমনের মৃত্যু হয়েছে। যথাযথ দায়িত্ব পালন করলে তিনি গলায় ফাঁস দেওয়ার সুযোগ পেতেন না কোনোভাবেই।

এ নিয়ে হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করেন মৃতের স্বজন ও স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ওই থানার দুই সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।

এমন প্রেক্ষাপটে বুধবার ডিএমপি কমিশনার থানায় আত্মহত্যার সহায়ক কোনো কিছু যাতে না থাকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা বলেন। তিনি বলেন, এমন কোনো কাজ করা যাবে না- যা পুলিশ বাহিনীকে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করে। হাজতখানায় আত্মহত্যার সহায়ক তেমন কিছু যেন না থাকে সে বিষয়ে অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নিশ্চিত হতে বলেন তিনি।

কমিশনার বলেন, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা ইস্যুতে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে গণঅসন্তোষ ইত্যাদির চেষ্টা করতে পারে। তাদের এ ধরনের অপচেষ্টার আগাম তথ্য সংগ্রহ করে- তা প্রতিহত করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।

শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে পুলিশ বাধা দেবে না, তবে রাজনীতির নামে যারা আগুন সন্ত্রাস বা গাড়ি ভাঙচুর করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল, মামলা তদন্ত, মাদক উদ্ধার ও মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি। এই কাজগুলোকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদারকি করার নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার।

তিনি আরও বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এখন অফিস সকাল ৮টায় শুরু হবে। এজন্য স্কুল আওয়ারে রাস্তায় গাড়ির চাপ বেশি থাকবে। বাচ্চাদের রাস্তা পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দেখলেই আমরা অবশ্যই রাস্তা পার করে দেব। প্রতিটি স্কুলের ক্লাশ শুরু ও শেষের সময় প্রত্যেক থানার ওসিদের টহল পুলিশিং জোরদার রাখার নির্দেশনা দেন তিনি।

মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভার শুরুতেই গত জুলাই মাসের খাতওয়ারি অপরাধ চিত্র বা অপরাধ বিবরণী পর্যালোচনা করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা তথা অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন ডিএমপি কমিশনার।

সভায় ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানসহ ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে শ্রেষ্ঠ পুলিশ অফিসারদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার, মো. আসাদুজ্জামান, সৈয়দ নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ওসিরা।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ