তীব্র শীত উপেক্ষা করে মাঠে আদিবাসী নারীরা

ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাটে স্মরণকালের তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার মধ্যেও পেটের দায়ে কৃষি শ্রমিকরা মাঠে নেমে বোরো ধান রোপণ করছের। শীতের কারণে সাধারণ মানুষের জনজীবন যেখানে স্থবির হয়ে পড়েছে সেখানে কৃষি শ্রমিকরা অনেক কষ্ট করে কাজ করছেন। এবার এ উপজেলার ১৮ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে এবার ধামইরহাট উপজেলায় ১৮ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিল জমিতে বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। গত এক সপ্তাহ থেকে ধান রোপণ চলছে। নদীর তীরবর্তী ও বিল জমিতে কৃষকরা আগাম চাষাবাদ শুরু করেছেন।

হাটনগর গ্রামের কৃষক বাহাদুর পাহান বলেন, ইতোমধ্যে তিনি আড়াই একর জমিতে কাটারীভোগ জাতের ধান রোপণ করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে কৃষক বোরো ধান চাষ করবেন।

গত আমন মওসুমে কৃষকরা ধানের দাম বেশি পাওয়ায় এবার বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ করা হচ্ছে। অধিকাংশ জমিতে জিরাশাইল ও কাটারিভোগ জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। এছাড়া ব্রিধান ৮১, ৮৯, ৯২, বঙ্গবন্ধু ১০০ এবং সুগন্ধি গোল্ডেন আতপ ও ৯০ আতপ ধান রোপণ করা হয়েছে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে মাঠে মাঠে নারী ও পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা পেটের দায়ে কাজ করছেন। নারী ও পুরুষ শ্রমিক সমান কাজ করলেও মজুরির ক্ষেতে নারীদের প্রতি বৈষম্য করা হচ্ছে।

আদিবাসী পুরুষ শ্রমিক শপরা পাহান বলেন, আমরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কাজ করি। সারা দিনে ৫শ’ টাকা পাই। এনিয়ে কোন রকমে সংসার চলে।

এ ব্যাপারে ধামইরহাটের হাটনগর গ্রামের আদিবাসী নারী আরতি পাহান বলেন, অনেক শীত তার ওপর ঠান্ডা পানিতে কাজ করতে হচ্ছে। কেউ আমাদেরকে কম্বল দেয় না। কম্বল পেলে অনেক উপকার হতো।

একই গ্রামের অপর নারী শ্রমিক মিনতী পাহান অনেকটা অভিযোগের সুরে বলেন, মাঠে আমরা পুরুষের সমপর্যায় কাজ করলেও নারী হওয়ায় মজুরি কম পাই। পুরুষরা ৫শ’ টাকা পেলেও নারীরা পায় ৩শ’ টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. তৌফিক আল জুবায়ের বলেন, গত আমন মৌসুমে কৃষকরা ধানের দাম বেশি পেয়ে বোরো ধান চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধান রোপণের সম্ভাবনা রয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বোরো ধান চাষে কৃষকদের সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রয়েছে। কোন জায়গা যেন পতিত না থাকে সে ব্যাপারে কৃষি বিভাগ সজাগ রয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ