স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ডাক্তার নেই, পাহারায় কুকুর

ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে গিয়ে ডাক্তারের পরিবর্তে দেখা গেছে তিনটি কুকুর। একটি বসে আছে ডাক্তারের টেবিলে আর বাকি দুটি কুকুর রোগীর বিছানায় শুয়ে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। জরুরি বিভাগে ডাক্তারের পরিবর্তে কুকুর ঢুকে পড়ার বিষয়টি নিয়ে গোটা উপজেলাব্যাপী শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের দায়িত্ব-কর্তব্য ও চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। শুক্রবারের (১০ মার্চ) ঘটনাটি অনুসন্ধান করলে ছবি তোলা ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেলেও তিনি পরিচয় প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই ব্যক্তি জানান, গত শুক্রবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী ভর্তি করান তিনি। রাত ১টার দিকে বিশেষ প্রয়োজনে নার্সদের কক্ষের দরজা বন্ধ থাকায় জরুরি বিভাগে যান। তিনি দেখেন জরুরি বিভাগেও কোনো নার্স কিংবা চিকিৎসক নেই। সেখানে শুয়ে আছে তিনটি কুকুর। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এই দৃশ্য মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি তুলে রাখেন।

ছবিটিতে দেখা যায়, ডাক্তারের টেবিলের ওপরে উঠে একটি ও রোগীর বেডের ওপরে দুটি কুকুর শুয়ে আছে। পরে তার রোগী সুস্থ হলে বাড়ি গিয়ে ছবিটি বন্ধুদের দেখালে তারা ছবিটি ফেসবুকে পোস্ট করেন। মুহূর্তেই ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। এখানেই শেষ নয়। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবাও চলছে ইচ্ছে মতো। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও সেবার মানে উন্নয়ন ঘটেনি এই হাসপাতালটির। এতে করে চিকিৎসা সেবার মান নিয়েও রয়েছে জনমনে নানা প্রশ্ন। সরকারি হাসপাতালের সেবা নিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। ছোট-খাট বিষয় নিয়েও দৌড়াতে হয় ময়মনসিংহ কিংবা ঢাকা পর্যন্ত। জরুরি বিভাগে ডাক্তারের পরিবর্তে কুকুর প্রবেশের জানতে চাইলে বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লোপা চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই দিন কে ডিউটিতে ছিল তা জানার চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তবে আমার কাছে মনে হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানকে হেয় করতে এই কাজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাফিজা জেসমিন জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। ছবিগুলো কখন তোলা হয়েছে তা নির্ধারণ করে কে দায়িত্বে ছিল তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ