১৬ জুলাই গণতন্ত্রেরও বন্দী দিবস: হাছান মাহমুদ

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের মতে, ১৬ জুলাই শুধু শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস নয়, সেই সাথে এটি গণতন্ত্রেরও বন্দী দিবস।

তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালের এ দিনে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করার মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রকেই বন্দী করা হয়েছিল। সে কারণে ১৬ জুলাই শুধু জননেত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস নয়, গণতন্ত্রেরও বন্দী দিবস।’

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অগ্নিবীণা, যার ধমনিতে বঙ্গবন্ধুর রক্ত প্রবহমান, যার কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠ প্রতিধ্বনিত হয় এবং সংকটে-সংগ্রামে যিনি অবিচল-অনির্বাণ, আমাদের প্রিয় নেত্রী, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এ দিনে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নানা অনিয়মের প্রতিবাদ করায়। পিতার অপরাধে নাবালিকা কন্যাকে গ্রেপ্তার, স্বামীর অপরাধে অসুস্থ স্ত্রীকে গ্রেপ্তার- তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এ ধরনের কাজগুলোর যখন কেউ প্রতিবাদ করছিল না, আমাদের আপোষহীন জননেত্রী শেখ হাসিনা সে দিন প্রতিবাদ করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে কণ্ঠরোধ করার জন্য, গণতন্ত্রকে বন্দী করার জন্যই সে দিন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।’

‘কিন্তু সে দিন যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা অনুভব করতে বাধ্য হয়েছে যে মুক্ত শেখ হাসিনার চেয়েও বন্দী শেখ হাসিনা অনেক বেশি শক্তিশালী। আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ সে দিন প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে এবং সেই প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে তারা বাধ্য হয়েছিল। শেখ হাসিনার মুক্তিলাভের মাধ্যমে গণতন্ত্র মুক্তি পেয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ ধস নামানো বিজয়ের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসিয়েছিল,’ যোগ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা গত সাড়ে ১১ বছর ধরে বাংলাদেশকে সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ তার নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, দারিদ্র্য ৪১ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে। তার নেতৃত্বে গত সাড়ে ১১ বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যোগ করলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ এবং বাঙালি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পৃথিবীর সামনে মর্যাদার আসনে আসীন হয়েছে।’

কিন্তু এখনও এক-এগারোর কুশীলবরা ষড়যন্ত্রের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তাদের গতিবিধির ওপর সরকারের নজর আছে। সেই সাথে আমাদের দলীয় নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে যারা গণতন্ত্রের অব্যাহত অভিযাত্রায় বিশ্বাস করেন, তাদের সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাই।’

এ সময় সরকারি কর্মচারীরা রিজেন্ট ও জেকেজি’র ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট নিয়ে থাকলে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অসৎ উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের কাছ থেকে কেউ যদি ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়ে থাকেন বলে তদন্তে বেরিয়ে আসে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুয়া সার্টিফিকেটধারীদের কখনও সরকার প্রণোদনা দেবে না।’

বিএনপি নেতা তারেক জিয়াকে ফিরিয়ে আনা হবে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারেক জিয়া শাস্তিপ্রাপ্ত আসামি। তার একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। আরেকটি মামলায় ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশের সাথে যেহেতু আমাদের বন্দীবিনিময় চুক্তি নেই, সে জন্য আলাপ আলোচনা চলছে। আমি মনে করি, সে যদি রাজনীতিবিদ হয় তারই উচিত ছিল আদালতের কাছে আত্মসমর্পণ করা। সত্যিকারের রাজনীতিবিদ কখনও আইন-আদালতকে ভয় পায় না। সত্যিকারের রাজনীতিবিদ নয় বিধায় তারা আর কখনও রাজনীতি করবে না বলে মুচলেকা দিয়ে দেশ থেকে চলে গিয়েছিল।’

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ