বগুড়ার মাঠে মাঠে আগাম আলু উত্তোলন শুরু

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ বগুড়ার মাঠে মাঠে আগাম আলু উত্তোলন শুরু হয়েছে। কোথাও আবার পাকরিজাতের আলু চাষ শুরু হয়েছে। বগুড়ার একই মাঠে আলু উত্তোলন যেমন চলছে ঠিক আবার আলু চাষও শুরু হয়েছে। চলতি বছর জেলায় সাড়ে ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর ফলন ধরা হয়েছে প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন।

শীতের প্রায় সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। সবজির সঙ্গে সঙ্গে নতুন আগামজাতের আলুও বাজারে উঠছে। আলু চাষিরা বেশি দামের আশায় আগাম চাষ করে বাজারে আলু তুলে থাকে। এছাড়া প্রতি বছর ৩ থেকে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগামজাতের আলু চাষ হয়ে থাকে। এই আলু আগাম হিসেবে বাজারে কিনে থাকে। চাষিরা বলছেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় আগামজাতের আলুর ভালো ফলন পেয়েছে। মাঠে মাঠে একদিকে আগাম আলু উত্তোলন চলছে আবার আলুর চাষও হচ্ছে।

বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারি কৃষি অফিসার ফরিদ হোসেন জানান, চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগামজাতের আলু চাষ হয়েছে। এই আলু বাজারে উঠেছে। আরো কিছু উঠার অপেক্ষায় আছে। নতুন আলু দিয়ে নবান্ন অনুষ্ঠান করতে হয় বলে এক শ্রেণীর চাষিরা বেশি দামের আশায় আগাম আলু চাষ করে থাকে। মৌসুমের শুরুতে নবান্নকে ঘিরে কৃষকরা আগামজাতের আলু চাষ করে থাকে। নতুন আলু বাজারে উঠলে হিমাগারের পুরাতন আলুর কদর থাকেনা। তাই অধিক লোকসান ঠেকাতে হিমাগারের আলু তাড়াতাড়ি বিক্রি করে দেয়। চলতি বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৫ হাজার ৬৯০ হেক্টর। আর ফলন পাওয়া যাবে ১২ লাখ ২০ হাজার ১৮ মেট্রিক টন। বৃষ্টিপাত না হলে আর আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে শেষ পর্যন্ত ফলন বেড়ে যেতে পারে। গত বছর প্রায় ১২ লাখ মেট্রিক টন ধরা হলেও সেখানে শেষ পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয় ১৩ লাখ মেট্রিক টন। আশা করা হচ্ছে চলতি বছরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়ে সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টনেরও বেশি আলু উৎপাদন হবে। এখন পর্যন্ত চাষি পর্যায়ে যে উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে তাতে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা শতভাগ অর্জিত হবে। বগুড়া ও তার আশপাশের জেলায় যে পরিমান আলু উৎপাদন হয়ে থাকে তা বিদেশের বাজারে দিতে পারলে একটি আলুও অবিক্রীত থাকবে না এবং সেই সঙ্গে বগুড়ার চাষিরা আলুর দামও পাবে ভালো।

আলু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবছর আলু বীজের দাম বেশি হলেও সংকট নেই। তবে সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। ফলে বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ বেড়ে গড়ে তা’ ১০ থেকে ১৩ হাজারে দাঁড়াবে। আগাম বাদ দিয়ে পুর্ণ মেয়াদে ৬০ থেকে ৭০ দিনে এই আলু তুললে বিঘা প্রতি সর্ব্বোচ ৮০ মন আলু পাওয়া যাবে। কোন কোন জমিতে আবার ৭০ মন আলু পাওয়া যেতে পারে।
বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিনের আলু চাষিরা জমি তৈরী করে বীজ রোপণ করছে। মাঠে মাঠ আলু চাষিরা চাষ দিয়ে জমি তৈরী করার পর বেড বেঁধে নিচ্ছে। কোথাও কোথাও আলু চাষিরা বীজ রোপণ করে বেড তৈরী করে দিচ্ছে। আর আগামজাতের আলু চাষিরা আলু আবাদ করে ফলন ঘরে তুলতে শুরু করেছে।

বগুড়ার সদর উপজেলার আশোকোলা গ্রামের আলু চাষি ফারুক হোসেন জানান, খোলা বাজারে এখনো আলুর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ টাকা কেজি। বাজারে এখনো আলুর দাম কম। নতুন আলু চাষের পর বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে একই দাম থাকলে খুব বেশি আয় করা যাবে না। চাষের পর ভালো আলু পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও দাম নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। বাজারে এখন বীজ আলু পাওয়া যাচ্ছে। বীজ আলু সংগ্রহ করে চাষিরা জমিতে রোপণ শুরু করেছে।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা জানান, আগামজাতের আলু চাষ করে ভালো দাম পাওয়া যায় বলে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়েছে। আলু চাষের আবহাওয়া এখন পর্যন্ত ভালো আছে।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ
সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১