খাগড়াছড়িতে বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত

বগুড়া নিউজ ২৪ঃ খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতী ইউনিয়নের গাজীনগর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় বিজিবি সদস্য ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক বিজিবি সদস্য ও একই পরিবারের তিন জনসহ পাঁচ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, ৪০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সিপাহী মো. শাওন (৩৫), আলুটিলা বটতলী গ্রামের সাহাব মিয়া (৭০), তার ছেলে মো. আলী আকবর (৩০) ও মো. আহাম্মদ আলী (৩০) এবং মফিজ মিয়া (৫০)। এদিকে, বিজিবির গুলিতে স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে আলুটিলা বটতলীর নিজবাড়িতে স্ট্রোক করে সাহাব মিয়ার স্ত্রী রঞ্জু বেগম মারা গেছেন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বৈদ্যুতিক তার টানার জন্য কয়েকটি গাছ কাটা হয়। এসময় একটি ট্রাক্টরে করে সাহাব মিয়া ও তার দুই ছেলে কয়েক টুকরা গাছ গাজিনগর বাজারের একটি ‘স’ মিলে নিয়ে যাওয়ার পথে বাধা দেয় বিজিবি। বিজিবি কাঠগুলো জব্দ করে নিয়ে যেতে চাইলে তারা ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানান। কিন্তু বিজিবি কোনো কথা না শুনে জোর করে নিয়ে যেতে চায়। এ অবস্থায় বাবা ও ছেলেরা বিজিবির সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে বিজিবির সঙ্গে বাগিবতণ্ডায় লিপ্ত হয়। মুহূর্তে তা ধাওয়া-পালটা ধাওয়া এবং সংঘর্ষে রূপ নেয়।

এ সময় বিজিবি সদস্যরা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সাহাব মিয়া ও তার ছেলে মো. আকবর আলী। এসময় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিজিবি সদস্য শাওন, স্থানীয় আহাম্মদ আলী, মফিজ মিয়া এবং হানিফ মিয়াকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে সেখানেই মারা যায় বিজিবি সদস্য শাওন ও আহাম্মদ আলী। বিজিবি সদস্য শাওন কীভাবে গুলিবিদ্ধ হলেন এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য কেউ জানাতে পারেনি।

মাটিরাঙ্গা থানার ওসি শামছুদ্দিন ভুঁইয়া সংঘর্ষে পাঁচজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় নিহত বিজিবি সদস্যসহ দুই জনের মরদেহ হাসপাতালে রয়েছে। অন্য দুই জনের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। তবে এ বিষয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এদিকে স্বামী ও দুই সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে মারা গেছেন সাহাব মিয়ার স্ত্রী রঞ্জু বেগম। গুলিবিদ্ধ মফিজ মিয়া চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।

Please follow and like us:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরানো সংবাদ